ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মেয়র আনিসুল হক বলেছে, ‘ডিএনসিসি এলাকায় ১৪১টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রয়েছে। এর মধ্যে ডিএনসিসির মালিকানাধীন সাতটি মার্কেটের ১২টি ভবন রয়েছে। এসব ভবন ধসে ব্যাপক প্রাণহানির আশঙ্কা থাকলেও এখনই ভেঙে ফেলা সম্ভব হচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাস্তবতার কারণে আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি।’
মঙ্গলবার গুলশান নগর ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মেয়র এ কথা বলেন।
এ সময় ডিএনসিসির কর্মকর্তা, ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং ডিএনসিসির মালিকানাধীন বিভিন্ন মার্কেটের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মেয়র বলেন, ‘গুলশান-১ কাঁচা মার্কেট ঝুঁকিপূর্ণ ছিল, যা ইতিমধ্যে ধসে পড়েছে। এছাড়া গুলশান-২ কাঁচা মার্কেট ও পাকা মার্কেট, খিলগাঁও তালতলা কাঁচা মার্কেট ও সুপার মার্কেট, কাওরানবাজার আড়ৎ ভবন, ১ নং ও ২ নং ভবন এবং কিচেন মার্কেট, মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেট কাঁচা বাজার ও পাকা বাজার, গাবতলী প্রান্তিক সুপার মার্কেট এবং আমিনবাজার ট্রাক টার্মিনাল ভবন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। বুয়েট এ ভবনগুলো ২০০৯ সালেই ভেঙে ফেলতে বলেছিল। মার্কেটগুলোর সমিতি ও দোকান মালিকদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড টাঙানো হয়েছে। তবে মালিক সমিতি সেগুলো খুলে ফেলে আদালতে মামলা করায় ভাঙা সম্ভব হয়নি। ফলে সেখানে ঝুঁকির মধ্য দিয়ে ব্যবসা চলছে।’
তিনি বলেন, ‘ডিএনসিসি মার্কেটগুলো ভেঙে নতুন করে বানাতে চায়। কিন্তু দোকানিদের স্বার্থও দেখতে হচ্ছে। কারণ একটি মার্কেট ভেঙে আরেকটি মার্কেট করতে ৫-৭ বছর লেগে যায়। ততদিন দোকান মালিকরা কোথায় যাবেন? তাদের রুটি-রুজির কি হবে?’
এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর সাথে এ ব্যাপারে কথা হয়েছে। কোনো স্বল্প মেয়াদি সমাধান খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় ডিএনসিসিকে অনেকটা অসহায় অবস্থায় থাকতে হচ্ছে। সরকার ১ হাজার কোটি টাকা দিলেও সমাধান হচ্ছে না। দোকানিরা মার্কেটগুলো ছেড়ে দিলে নতুন মার্কেট তৈরি করা যেতে পারে।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, ‘ডিএনসিসির মার্কেটগুলোতে অনেক অবৈধ দোকান রয়েছে। এগুলো ভেঙে ফেলা হবে। এ ব্যাপারে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।’
এ সময় মেয়র ডিএনসিসি এলাকায় ব্যক্তি মালিকানাধীন ১৪১টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নিজেদের উদ্যোগে ভেঙে ফেলার জন্য অনুরোধ করেন ভবন মালিকদের।
সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত কয়েক মার্কেটের ব্যবসায়ী নেতারা জানান, সিটি করপোরেশনের একটি মার্কেট বরাদ্দ ও নির্মাণ করে হস্তান্তর করতে প্রায় ১০ বছর লেগে যায়। এমনকি মিরপুরের শাহ আলী মার্কেট ২৮ বছর পর হস্তান্তর করা হয়েছে। বাউনিয়া বাঁধে একটি মার্কেট ১১ বছর আগে বরাদ্দ দিলেও এখনো সেখানে কোনো মার্কেটই হয়নি।